পুঁইশাকের বিচির উপকারিতা- পুঁই শাকের পুষ্টিগুণ

পুঁইশাকের বিচির উপকারিতা ও পুঁই শাকের পুষ্টিগুণ গুলো নিয়ে আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাতে চলেছি। যদি এই বিষয়গুলো আপনি জানতে ইচ্ছুক হন।তাহলে আমাদের সাথে থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
পুঁইশাকের বিচির উপকারিতা
পুঁইশাক খাওয়ার অপকারিতার ও পুঁইশাক খেলে কি গ্যাস হয় ? আপনাদের মধ্যে অনেকে এ ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন বা জানার জন্য অনেক ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করেন। আজকে তাদের জন্য আমার এই পোস্টটি।

ভূমিকা

পুঁইশাক ও পুঁই এর বিচি তে আমরা প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, ভিটামিন, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, জিংক এবং খনিজ পদার্থ গুলো পেয়ে থাকি। যা আমাদের শরীরেকে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। পুঁই শাকে থাকা ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের মতো সমস্যা থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।

পুঁইশাক খেলে কি গ্যাস হয়

পুঁইশাক খেলে কিছু মানুষের গ্যাস এর সমস্যা হতে পারে। পুঁইশাকে থাকা ফাইবার এবং কিছু অস্ত্রোকেটোলোজিকাল কারণে কিছু মানুষের পাচন প্রক্রিয়া প্রতিরোধ করে এবং তাদের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। ফাইবারের অতিরিক্ত মাত্রা গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে। সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

পুঁইশাকের বিচির উপকারিতা 

পুঁইশাক যতটা মানুষের কাছে প্রিয় তার থেকেও বেশি পছন্দ করে মানুষ পুঁইয়ের বিচিকে। এই বিচি পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। কম বেশি প্রায় মানুষই পছন্দ করে এই পুঁইশাক এর বিচি। পুঁইশাকের চেয়ে পুঁইশাকের বিচিতে তিন গুণ বেশি ফাইবার পাওয়া যায়। এই বিচি থাকা ফাইবার যা আমাদের শরীরের ফিস্টুলার সমস্যা, পাইলস এর সমস্যা দূর করতে সহযোগিতা করে। 


এই বিচি খেলে রক্তের চর্বি বেড়ে যাওয়ার কোন ভয় নেই । এই বিচিতে ছেলেদের শুক্রানুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে আয়রন ফলিক এসিড জিংক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।পুঁই শাক ও পুঁইশাকের বিচির আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। 


 বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশগুলিতে খুব সাধারণভাবে খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি বিভিন্ন প্রকারের খাবারে ব্যবহৃত হয়।যেমন সবজি, ডাল, মাছে ইত্যাদি।পুঁই শাকের বিচি অনেক প্রকার উপকারিতা রয়েছে, যা নিম্নলিখিত বর্ণনা করা হলো:

  • ওজন কমাতে:পুঁইশাকের বিচিতে থাকা আইরন ও ভিটামিন সি যা আমাদের মেটাবলিজম ক্রিয়াকে সহজ করে এবং ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে থাকে। যা আমাদের ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে থাকে।
  • হজম ক্ষমতা বাড়াতে: পুঁইশাক ও বিচি আমাদের প্রচুর পরিমাণ ফাইবার দিয়ে থাকে যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। এতে আমাদের হজম শক্তি বাড়ে।
  • ডায়াবেটিস কমাতে: পুঁইশাকে আমরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেয়ে থাকি। ইনসুলিন এর ভারসাম্য ঠিক রাখতে ও রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • বাড়ন্ত শিশুদের বৃদ্ধিতে: বাড়ন্ত শিশুদের নিয়মিত পুঁইশাক খেলে এতে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটেন বাচ্চাদের যোগান দেয় যা শিশুদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
  • চোখ ভালো রাখে: পুঁইশাকে থাকা পিটাকারোটিন ও লুইটেন যা আমাদের চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • হাড় শক্ত করে: পুঁইশাকের বিচিতে থাকা ভিটামিন-কে আমাদের হাড় মজবুত করতে সহযোগিতা করে।
  • শুক্রাণু বৃদ্ধিতে:পুঁইশাকের বিচিতে থাকা আয়রন,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফলিক অ্যাসিড যা শুক্রাণু বাড়াতে সহযোগিতা করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: পুঁইশাকের বিচিতে আমরা খুব ভালো পরিমাণে পটাশিয়াম পেয়ে থাকি যা রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ: পুঁইশাকে থাকা ক্লোরোফিল যা ক্যান্সারের জন্য দায়ী কাসিনোজেনিক আটকাতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের সুরক্ষায়:পুঁইশাকের বিচিতে আছে ভিটামিন-এ যা ত্বক সুন্দর করতে ও সুরক্ষায় কাজ করে থাকে।
  • পুষ্টিকর: পুঁই শাকের বিচি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন, ফোলেট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য গুণাবলী সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা: পুঁই শাকের বিচি প্রাকৃতিক ইনসুলিন নির্মাণে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
  • হৃদরোগ প্রতিরোধ করা: পুঁই শাকের বিচি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে হৃদরোগ সমস্যাগুলো হাওয়া থেকে বাচায়।
  • পাচন তন্ত্র সুস্থ্য রাখা: পুঁই শাকের বিচি হলো ফাইবার সমৃদ্ধ । যা পাচন সিস্টেমকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে।
  • শরীরের ব্যথা ও স্বেলার মুক্তি: পুঁই শাকের বিচি শরীরের ব্যথা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে

পুঁইশাক খাওয়ার অপকারিতার

পুঁইশাক অনেক উপকারিতা আমরা পেয়ে থাকি এটা কারো না জানা নাই। কিন্তু এর সাথে আমরা কিছু অপকারিতার কথাও জানি সেগুলো জানা যাক। বেশি পরিমাণে পুঁইশাক খেলে অনেক সময় এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। পুঁইশাকে আমরা পিউরিন নামক উপাদান পেয়ে থাকে যা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরে ইউরিক এসিড বেড়ে যেতে পারে এর ফলে কিডনিতে পাথর ও গুডবাত রোগগুলির সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।


যাদের কিডনিতে পাথর ও পিত্তথলিতে পাথর এর সমস্যায় ভুগছেন তিনারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পুঁইশাক খাবেন।

পুঁই শাকের পুষ্টিগুণ

গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে পুঁইশাক অন্যতম। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন খনিজ পাওয়া যায়। বৈশাখে রয়েছে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং চোখের পুষ্টি জোগাতে চুলকে শক্ত রাখতে সাহায্য করে। পোশাকে আমরা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পেয়ে থাকি যা আমাদের হজম ক্রিয়া ভালো রাখতে সহায়তা করে। 


অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত আর জাতীয় খাবার যেমন পুইশাক খেলে হেমোরয়েড , ফিস্টুলা ও পাইলসের মত সমস্যা হওয়ার চান্স কমে যায়। এই সবজি অনেক পুষ্টিগুণ যেমন ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অন্যান্য উপাদান সমৃদ্ধ। নিচে পুঁই শাকের প্রধান পুষ্টিগুণ দেওয়া হলো:
  • ভিটামিন-সি : পুঁই শাক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হয়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং স্কোর্বিউটিক এসিডের অভাব দূর করে।
  • ভিটামিন-এ : রোগ প্রতিরোধে এবং চোখের সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
  • ভিটামিন-কে: নরমাল রক্ত প্রবাহ বজায় রাখে এবং রক্তস্রাবের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • খনিজ মধ্যে রয়েছে
  • ফোলেট : গর্ভধারণের সময় প্রস্তুতি করায় এবং নিঃশুল্ক রক্ত প্রদানে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় ফলে তোর ঘাটতি হলে মা এর সাথে পেটের বাচ্চারা অনেক ক্ষতি হয়। আর পুঁইশাক থেকে আমরা এই ফলেটো খনিজ পদার্থটি পেয়ে থাকে।
  • পটাশিয়াম : হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করতে সাহায্য করে।
  • ফাইবার : পুঁইশাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ, যা পাচন তন্ত্র কে সুস্থ রাখে এবং ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এবং কিছু ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিকে কমাতে ও সাহায্য করে।
  • প্রোটিন: পুঁই শাক প্রোটিনের এক উৎস হতে পারে এবং মাংসের প্রোটিনের পরিবর্তে খুব ভালো বিকল্প হতে পারে।
  • ক্যালরি: আমরা পুঁইশাক থেকে ২৫ কিলো ক্যালরি পেয়ে থাকি।
  • শর্করা: পুঁইশাক থেকে আরও ২.১ গ্রাম শর্করা পেয়ে থাকে।
পুঁই শাক একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি, যা রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং পুষ্টি গুণগুলো পাবার একটি ভাল উৎস।

লেখক এর মতামত

আজকে আমরা আপনাদের পুঁই শাক এবং বিচি খাওয়ার উপকারিতা গুলো এবং পুষ্টি উপাদান গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি বা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। যদি এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের উপকারে এসে থাকে কিংবা ভালো লেগে থাকে ।তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে দেবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুকিটাকিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url