শুটকির উপকারিতা ও অপকারিতা-শুটকি মাছের ক্ষতিকর দিক

শুটকির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্বন্ধে আপনারা অনেকেই জানতে চান। শুটকি মাছ খাওয়া কি আমাদের শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ তা আমরা অনেকেই বিস্তারিত জানিনা। তাই আজকে আপনাদের সাথে শুটকি মাছের ক্ষতিকর দিক গুলো আলোচনা করতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে পড়া শুরু করা যাক।
শুটকির উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের শুটকি মাছের উপকারিতা অপকারিতা এ পুষ্টিগুণ বিস্তারিত বিষয়গুলো নিয়ে জানাতে চলেছি। চলুন তাহলে নিচের পয়েন্ট গুলো মনোযোগ সহকারে পড়া শুরু করা যাক।

ভূমিকা

শুটকি মাছ অনেকের কাছে খুবই পছন্দের একটি মাছ। শুটকি মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু। সবার কাছে অবশ্য একই রকম না। এর গন্ধের কারণে অনেকে পছন্দ করেন না। আবার অনেকেরই এলার্জির সমস্যার জন্য এই শুটকি মাছ খেতে পারে না। শুটকি মাছের অনেক উপকারী দিক রয়েছে তেমন কিছু অপকারী দিক রয়েছে। এই পোষ্টের মধ্যে আপনাদের শুটকি মাছের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়েও আলোচনা করেছি।

শুটকির উপকারিতা ও অপকারিতা

মাছকে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করার জন্য রৌদ্রে শুকিয়ে শুটকি করা হয়। কয়েকদিন রৌদ্রে মাছের জলীয় অংশ শুকিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে শুটকি মাছগুলো অনেক দিন ঘরে রেখে খাওয়া যায়। রোদে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য মাছে জীবাণুর আক্রমণ হয় না। এই মাছের স্বাদ ও গন্ধের জন্য অনেকের কাছে খুব প্রিয় একটি খাবার।
শুটকি মাছের উপকারিতা গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো:
  • হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে শুটকি মাছ।
  • ভুলে যাওয়া রোগ(ডিমেনশিয়া) কমাতে সাহায্য করে।
  • বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে এই শুটকি মাছ।
  • মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • শুটকি মাছ লোহিত রক্তকণিকা গঠনে মোক্ষম ভূমিকা পালন করে।
  • শুটকি মাছ দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
  • ছোট বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এই শুটকি মাছ।

শুটকি মাছের অপকারিতা গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো:
  • যাদের ডায়াবেটিসে ভুগছেন কিংবা কিডনি রোগে ভুগছেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • অধিক লবণযুক্ত শুটকি মাছ খেলে আপনার রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
  • আপনার শরীরে ইউরিক এসিড এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকলে সে ক্ষেত্রে শুটকি মাছ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • শুটকি মাছ খাওয়ার আগে কিছু কাজ করতে হবে যেমন গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবং ফুটিয়ে নিয়ে পানি ফেলে দিতে হবে।
  • রাসায়নিক যুক্ত শুটকি মাছ খাওয়া যাবে না তা আপনার শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর।

শুটকি মাছের ক্ষতিকর দিক 

সংরক্ষণ ও ব্যবহারের উপায় হিসেবে মাছ শুকানোর প্রচলন থাকলেও শুটকি মাছ খাওয়ার সাথে কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে তা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ। এই উদ্বেগগুলি সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে শুরু করে পরিবেশের উপর প্রভাব পর্যন্ত। শুটকি মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
  • শুটকি মাছের প্রধান উদ্বেগের মধ্যে একটি হল ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিনের সম্ভাব্য উপস্থিতি। শুকানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন, ক্লোস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম বা সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়া মাছকে দূষিত করার ঝুঁকি থাকে। অনুপযুক্ত শুকানোর কৌশল এবং অস্বাস্থ্যকর অবস্থা এই ক্ষতিকারক অণুজীবের বৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটাতে পারে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত শুকনো মাছ খাওয়ার ফলে খাদ্যে বিষক্রিয়া, গুরুতর পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, বিভিন্ন রকম অসুস্থতা হতে পারে।
  • শুকনো মাছের সাথে সোডিয়ামের উচ্চ পরিমাণ থাকে। মাছ ডিহাইড্রেশনের মধ্য দিয়ে যায় যার ফলে প্রতি পরিবেশনায় সোডিয়ামের ঘনত্ব বেশি হয়। সোডিয়ামের অত্যধিক ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • শুটকি মাছে পাওয়া হিস্টামিনের উচ্চ মাত্রা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। হিস্টামিন হল মাছে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যৌগ যা মাছ অপর্যাপ্তভাবে নিরাময় বা ভুলভাবে সংরক্ষণ করা হলে ক্ষতিকর মাত্রায় বৃদ্ধি পেতে পারে। হিস্টামিনের অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াগুলি হালকা লক্ষণ যেমন চুলকানি এবং আমবাত থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট এবং অ্যানাফিল্যাকটিক শকের মতো আরও গুরুতর লক্ষণ পর্যন্ত হতে পারে।
  • শুঁটকি মাছ কিছু ক্ষতিকারক দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া অপরিহার্য। শুকনো মাছ খাওয়ার সময় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি উচ্চ সোডিয়াম সামগ্রী, হিস্টামিন অসহিষ্ণুতা এবং পরিবেশগত প্রভাবগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদেরকে শুটকিমার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুকিটাকিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url