ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা -বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা ও বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা এগুলো কি আপনার জানা আছে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না ঘি এর কত উপকারিতা। আজকে তাহলে চলুন ঘি সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক। আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী।
ছোট বাচ্চাদের ওজন বাড়াতে এবং ইমিউনিটি শক্তি বাড়াতে ও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।পুরাতন ঘি এর উপকারিতা,প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা চলুন তাহলে আজকে জেনে নেওয়া যাক।ভূমিকা
ঘি এর উপকারিতা অনেক। প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত ঘি এর ব্যবহার হয়ে আসছে। এখনকার সময়ে অনেক সচেতন ব্যক্তিরা আছেন যারা মনে করেন ঘি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট। যা আমাদের শরীরকে অনেক মোটা করবে। এভাবে অনেকেই খান না। কিন্তু তারা তো জানেন না সঠিক তথ্যটা। ঘি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী।
ঘি এর উপকারিতা
ঘি এর উপকারিতা গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো:
- হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ঘি থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান, ভিটামিন-এ,ভিটামিন-ই ও ভিটামিন-ডি পেয়ে থাকে যা আমাদের শারীরিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- আমাদের মধ্যে অনেকেরই চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকি। ঘি আমাদের চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে।
- ঘি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
- বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে আমরা বিভিন্ন রকমের মিনারেল ও ফ্যাটি এসিড পেয়ে থাকে যা ঘি খেলে এই মিনারেল ও ফ্যাটি এসিড ভালোভাবে শোষণ করতে সাহায্য করে থাকে।
- আমরা অনেক সময় ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগি, ঘি নিয়মিত খেলে ত্বক ভালো রাখতে ও মুখের ঘা ভালো করতেও সাহায্য করে।
- মস্তিষ্কের কার্যকর ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে এই ঘি।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলে অনেকটা।
- বাড়তি ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে থাকে।
- ঘি থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি যা আমাদের প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে থাকে।
ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
কি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। প্রতিটা জিনিস এ যেমন উপকার রয়েছে তেমন এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। ঘি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। যেমন হজম ক্ষমতা বাড়ানোর কাজে সাহায্য করে থাকে। তেমন চোখের সমস্যা দূর করে চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
নিয়মিত ঘি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে। ঘি থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি। সেগুলোকে শরীরে ভালোমতো শোষণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। যখন আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি ভিটামিন পেয়ে থাকি তখন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। নিয়মিত ঘি খেলে ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ঘি খেলে ছোট বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ খুব ভালো মতো হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের কার্যকর ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। ওজন কমানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ডায়েট করে থাকি। এমত অবস্থায় ঘি আমাদের শরীরে ওজন কমাতে এবং সঠিক পুষ্টিগুলো শরীরে পাওয়াতে সাহায্য করে থাকে। আমরা তো ঘিয়ের অনেক উপকারিতা সম্বন্ধেই জেনে গেলাম।
চলুন তাহলে ঘি কিছু অপকারিতা সম্বন্ধে জেনে নেই:
- অনেক বেশি পরিমাণে ঘি খাওয়ার ফলে রক্তে কোস্টরেল পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাতে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। যেমন হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক এর মত সমস্যা।
- যারা উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য বেশি পরিমাণে ঘি খাওয়া ঠিক না।
- অতিরিক্ত পরিমাণে ঘি খেলে শরীরের চর্বির পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। সেদিকে খেয়াল রেখে খাওয়াটাই শ্রেয়।
- এই সুপার ফুড যখন বেশি পরিমাণে খাওয়া হবে তখন বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। একবারে অনেক পরিমাণে ঘি খেলে পেটের সমস্যা যেমন পাতলা পায়খানার মতো সমস্যা হতে পারে।
- যারা অলরেডি ডায়াবেটিস এর সমস্যায় পড়ে গেছেন তাদের জন্য ঘি এড়িয়ে চলা ভালো। তাছাড়া এই ঘি ডায়াবেটিস এর রোগীদের স্বাস্থ্যের অবন্নতিও করতে পারে।
- যারা অনেক সময় ধরে বসে বসে কাজ করেন তেমন হাঁটাচলা হয় না তাদের ক্ষেত্রেও ঘি এড়িয়ে চলা ভালো বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন আমরা যদি যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পর্যন্ত ঘি গ্রহণ করলে শারীরিক দিক থেকে অনেক উপকার পেয়ে থাকে। ঘি তে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-কে, ও ভিটামিন-ই। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে খনিজ পদার্থগুলো শোষণে সহায়তা করে। ঘি রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য, এন্টিফাঙ্গাল, ও এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণ। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।
- হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে: পেট ফোলা, গ্যাসের সমস্যা সমাধানে ঘি দারুন কাজ করে থাকে। খাবার হজমেও সহায়তা করে থাকে।
- শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে: ঘি থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি তেমনি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। শরীরে পুষ্টির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
- মস্তিষ্কের কার্যকর ক্ষমতা বাড়াতে: ঘি থেকে আমরা ওমেগা-3 ও কমেগা -6, ফ্যাটি এসিড পেয়ে থাকি যা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকর ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
- বাড়তি ওজন ঝরাতে সহায়তা করে: আমাদের মধ্যে অনেকে মনে করেন ঘি খেলে হয়তো বা অনেক মোটা হয়ে যায় কিন্তু না। নিয়মিত ব্যায়াম ও ডায়েট এর সাথে সাথে যতটুকু প্রয়োজন শরীরের হিসেব করে ততটুকু পরিমাণে খেলে আপনি সঠিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান পেয়ে যাবেন ঘি থেকে। যে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে: গিয়ে থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ,ডি ও ই পেয়ে থাকি যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- শরীরকে প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে: ঘি তে রয়েছে ফেটি অ্যাসিড এবং ল্যারিক অ্যাসিড যা আপনার শরীরকে এনার্জি জোগাতে ওশরীরকে চাঙ্গা করতেও সাহায্য করবে এক কথায় আপনার শরীরকে প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করবে।
- সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করবে: ঘি তে রয়েছে প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে ঘি এর কোন জুড়ি হয় না। ত্বকের হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনে।
পুরাতন ঘি এর উপকারিতা
- পুরাতন ঘি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কোষের বৃদ্ধির জন্য এবং যোগাযোগের প্রবাহকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- অনেক পুরাতন ঘি একজিমা কিংবা শরীয়সিস এ সমস্যা ভেতর থেকে দূর করতে সাহায্য করে থাকে।পেপটিক আলসার, আলসারেটিক পোলাইটিস, পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে এই পুরাতন ঘি।
বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
ঘি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। ছোট বাচ্চাদের শরীরে জন্য আরও বেশি উপকারী। কারণ গুলো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
- শৈশবে বাচ্চাদের বৃদ্ধি ও শারীরিক বিকাশের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
- বাচ্চাদের গ্রোথ ঠিক রাখতে এবং সঠিক ওজন ধরে রাখার জন্য প্রাকৃতিক চর্বি ঘি প্রয়োজন।
- ঘি থেকে বাচ্চারা প্রাকৃতিক ভাবেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেয়ে থাকে। যার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ঘি থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি ও ভিটামিন-ই শরীরের শোষণ করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রতিটা ভিটামিন ঠিকঠাক মতো পেয়ে থাকলে বাচ্চাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ঘি আপনার শিশুর মানসিক বিকাশের সহায়তা করে থাকে।
- ঘি আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। একটি বাচ্চার জন্মের এক বছর মধ্যে মস্তিষ্কের বিকাশ একটি গুরুত্ব পূর্ণ সময়। মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রাকৃতিক চর্বি অনেক প্রয়োজন আর এই প্রাকৃতিক চর্বি খুব ভালো উৎস হল ঘি।
- চোখের জ্যোতি বাড়ানোর জন্য ঘি বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদেরকে বিয়ের উপকারিতা সম্পর্কে এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি যদি আপনাদের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।
টুকিটাকিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url