হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি -হাঁপানি রোগের লক্ষণ

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি এই সকল বিষয়ে আমাদের সকলেরই অবগত থাকা উচিত।হাঁপানি রোগের লক্ষণ গুলোই বা কি তা অনেকেই জানেনা কিংবা বুঝতে পারেন না। আজকে তাদের জন্যই আমার এই পোস্টটি। পুরো আর্টিকেল পড়লে আশা করা যায় বিস্তারিত ধারণা পাবেন। চলুন তাহলে পড়া শুরু করা যাক।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কিহাঁপানি রোগের কারণ, কি খেলে হাঁপানি ভালো হয় ,দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমানোর উপায় গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করতে চলেছি। চলুন তাহলে এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে জেনে নেওয়া যাক।

ভূমিকা

শ্বাসকষ্ট বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অসুখের কারণে ও হয়ে থাকে। শ্বাসকষ্ট হল ঘন ঘন শ্বাসনাওয়া, দম বন্ধ হয়ে আসা, এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। শ্বাসকষ্ট হলে আমরা বিভিন্ন ধরনের অসুখের কথা চিন্তা-ভাবনা করি এবং ভয় পেয়ে থাকি। এছাড়া ভাইরাল ফেভার যেমন ঠান্ডা লাগা কাশি হওয়া থেকেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। 


বায়ু দূষণের কারণে এই রোগের সমস্যাটা আরও দিন দিন বেড়ে চলেছে। এমত অবস্থায় এজমার মত সমস্যা আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই মনে সাহস রেখে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে অনেকটা ভালো থাকা যায়।

হাঁপানি রোগের লক্ষণ 

হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • ঘনঘন কাশি হওয়া: শ্বাসকষ্ট হওয়ার প্রধান লক্ষণই হল ঘন ঘন কাশি হওয়া ধুলাবালি, ধোয়া কালি, কুয়াশা ইত্যাদি নাকে আসামাত্রই কাশি শুরু হয়ে যাওয়া।
  • মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্ট হওয়া বা নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া: শ্বাসকষ্টের আর একটি অন্যতম লক্ষণ হল নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া। ফুসফুসের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পায় না তখনই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
  • নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় চো চো শব্দ হওয়া: শ্বাসকষ্ট শুরু হলে নিঃশ্বাস নিতে গেলে বুকের ভিতরে চো চো শব্দ শুরু হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন না পাওয়ার কারণে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় ছাড়ার সময় এই শব্দ হয়ে থাকে।
  • বুকের ভিতরে চাপ ধরে আছে এমন ভাব হওয়া: হাঁপানির সময় বা শ্বাসকষ্টের সময় শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। এর ফলে শারীরিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। বুকের মধ্যে টান ভাব সৃষ্টি হয় যার কারণে বুকের ভিতর চাপ ধরে থাকে।
  • ঘন ঘন শ্বাস ফেলা: শ্বাসকষ্ট শুরু হলে লম্বা লম্বা শ্বাস নেওয়ার সম্ভব হয় না যখনই জোরে নিঃশ্বাস নিতে যাবে তখনই বুক চেপে আসা এজন্য সেই ব্যক্তি ছোট ছোট নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য হয়।
  • ঘন ঘন কাশি হতে থাকা: ছোটখাটো বিভিন্ন কারণে কাশি হওয়া। ঠান্ডা কালীন সময়ে কাশির সমস্যারও বেড়ে যেতে পারে।

হাঁপানি রোগের কারণ

  • হাঁপানি বংশগত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। পূর্বে বংশের মধ্যে কারো হাঁপানি রোগ থাকলে পরবর্তী প্রজন্ম হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • ফুলের রেনু, ছত্রাক, তেলাপোকা, পশুর লোম কারণেও অনেক সময় হাঁপানি সমস্যায় পড়তে পারে।
  • সিগারেটের ধোঁয়া, বায়ু দূষণ, ঝাঁজালো রঙের গন্ধ, কলকারখানার বর্জ্য পদার্থের ধোঁয়া থেকেও হাঁপানি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • আবেগপ্রবণতার কারণে অনেক সময় হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে।
  • বিশেষ কারো ক্ষেত্রে খাবারের মধ্যে গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ, বেগুন, ইলিশ মাছ, পুঁইশাক ইত্যাদি খাবারের হাঁপানি মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
  • ঘরে অনেকদিন পর্যন্ত কাপড়-চোপড় নাড়া হয়নি এবং কাপড়-চোপড়ে হাত দিলে পুরাতন ধূলার সংস্পর্শে আসা মাত্রই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অনেকদিন পর্যন্ত নেশা জাতীয় দ্রব্য যেমন বিড়ি সিগারেট ইত্যাদি খেলে হাঁপানি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • শরীরে অন্য কোন রোগের কারণে কিছু ওষুধ আছে যেগুলো খেলে হাঁপানি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলেও শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে।

কি খেলে হাঁপানি ভালো হয় 

শ্বাসকষ্টের রোগীদের একটু সচেতনভাবে চলাচল করতে হয়। এমন কোন খাবার নেই যে খাবার খেলে হাঁপানি রোগ ভালো হয়ে যায় বা একবারে নির্মূল হয়ে যায়। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে অনেকটা ভালো থাকা যায়। শ্বাসকষ্টের সমস্যাটা একটু কম থাকে। আপনি ডায়েটে বিভিন্ন ধরনের খাবার রাখতে পারেন যার মধ্যে রয়েছে:

  • আপেল
  • বেদানা
  • পালং শাক
  • আঙ্গুর
  • ব্রকলি
শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়লে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা ও ইনহেলার ব্যবহার করা।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় 

  • হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেলে শুয়ে না থেকে উঠে বসা।
  • চেয়ারে বসে টেবিলের উপরে মাথা কাত করে রাখলেও অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
  • দেয়াল থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে , পিঠ দেওয়ালের সাথে ঠেকিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
  • চা কিংবা কফিকফি পান করা যেন শ্বাসনালে খুলতে অনেকটা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
  • যতদূর সম্ভব মুখ বন্ধ রেখে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ফেলা।

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদেরকে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে আমাদের কি করণীয়। এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এখনকার সময়ে প্রায়ই বেশিরভাগ মানুষই আমরা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যায় ভুগে থাকে। তাই এ বিষয়গুলো নিয়ে সকলেরই সাধারণ কিছু ধারণা থাকা উচিত। প্রিয় পাঠক এ পোষ্টটি পড়ে আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে দেয়ার জন্য অনুরোধ রইল।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুকিটাকিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url