শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ-শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ
শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ ও শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ তা কি আপনার জানা আছে ? অনেকে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জানতে আগ্রহী হন। তাদের জন্য আজকে এই পোস্টটি। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। অতিভুক্ত গরমে আমাদের কি করনীয়, অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ বা কি? ইত্যাদি বিষয়গুলো।
শরীর অতিরিক্ত গরম থাকার কারণ কি? অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়,অতিরিক্ত গরমে কি কি সমস্যা হয় প্রিয় পাঠক চলন এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা
আসছে গরম এই গরমে বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়ে থাকে আমাদের শরীরে।শরীরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। যেমন হাইপারথারমিয়া, হাইপারথাইরয়েডিজম, হিট স্ট্রোক, সংক্রমণ এবং স্নায়বিক সমস্যা অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ হতে পারে। আর্দ্রতা বজায় থেকে এমন সুতোর তৈরি ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন যাতে ঘাম বাষ্পীভূত হয় এবং শরীরকে শীতল করে।
শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ
- পরিবেশগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি: বাহ্যিক তাপমাত্রা যেমন, উষ্ণ আবহাওয়া, বৃষ্টির অভাব কোনও ব্যক্তির শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ তৈরি করতে পারে।
- শারীরিক পরিশ্রম: শারীরিক শ্রম, ব্যায়াম অথবা কাজের ফলে শারীরিক অভ্যন্তরীণ শক্তির ব্যয় হয়। আমার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় এবং অতিরিক্ত গরম লাগে।
- ঘামের অভাব: ঘামের মাধ্যমে শরীর অতিরিক্ত তাপ বের করে দেয়। কোন কারনে যদি শরীর থেকে ঘাম কম বের হয় তাহলে শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- অনুভূতি সংশ্লিষ্ট কারণ: অনেক ক্ষেত্রে, মানুষের অনুভূতি পরিবর্তনের ফলে তারা অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা অনুভব হতে পারে।
- অতিরিক্ত পোশাক: অনেক সময় অতিরিক্ত পোশাক শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে। হলে অতিরিক্ত পোশাক পরিধান করলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- জ্বর : জ্বর শারীরিক অসুস্থতার একটি অন্যতম লক্ষণ। জ্বরের সময় শরীর কৃত্রিমভাবে তার তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। ফলে জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- সংক্রমণ: শরীরের কোথাও সংক্রমিত হলে। সংক্রমণের ফলে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। প্রদাহ তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
- মানসিক উদ্বেগ এবং চাপ: অতিরিক্ত মানসিক উদ্বেগ এবং চাপের ফলে শরীরে অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা দেয়। যা শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ হতে পারে।
- হরমোন জনিত কারণ: মেনোপজ, থাইরয়েড সমস্যা এবং অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তনের ফলে শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে।
- অনিদ্রা: নিয়মিত ও সঠিক মাত্রায় ঘুম মানুষের শরীরকে কর্মক্ষম করে তোলেশরীরকে শীতল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অনিদ্রার ফলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে।
- ক্যাফিন: ক্যাফিন রক্তনালী প্রসারিত করে। যার ফলে ত্বকে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয় এবং গরম অনুভূতি হয়।
- ডিহাইড্রেশন: কম পানি পান করা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বা ডায়রিয়ার মাধ্যমে শরীরে পানি স্বল্পতা বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধের জন্য শরীরতার নিজস্ব তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- স্বাস্থ্যসম্পর্কিত অবস্থা: কিছু অসুস্থতা শরীরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। যেমন হাইপারথারমিয়া, হাইপারথাইরয়েডিজম, হিট স্ট্রোক, সংক্রমণ এবং স্নায়বিক সমস্যা অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ হতে পারে।
- ওষুধ: স্নায়বিক উদ্দীপক, অ্যান্টিকোলিনার্জিক ওষুধ এবং কিছু মানসিক ওষুধ, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে শারীরিকভাবে গরম অনুভূত হতে পারে।
- অ্যালকোহল: অ্যালকোহল ব্যবহার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায় যা শরীরের গরম ভাব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- বয়স এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা: শিশু, অল্পবয়সী শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যারা হৃদরোগ, স্থূলতা বা ডায়াবেটিসের মতো স্বাস্থ্য ঝুকি রয়েছে তাদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হ্রাস পাই। ফলে শরীর সবসময় গরম অনুভূত হয়।
শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ
শরীর গরম থাকার বিশেষ কিছু শারীরিক সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।
সংক্রমণ
- জ্বর: জ্বর হলে শরীর গরম অনুভূত হয় এবং স্বাভাবিকের থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: যক্ষ্মা, টাইফয়েড, মেনিনজাইটিস।
- ভাইরাস সংক্রমণ: সর্দি-কাশি, ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা।
- ছত্রাক সংক্রমণ: ক্যান্ডিডিয়াসিস।
- পরজীবী সংক্রমণ: ম্যালেরিয়া।
প্রদাহ
- আর্থারাইটিস
- অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ
- রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস
- অস্টিও আর্থারাইটিস
অন্যান্য
- হরমোনের পরিবর্তন
- ক্যান্সার
- স্ট্রোক
- মস্তিষ্কের আঘাত
- নির্জলীকরণ
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- অ্যালার্জি
- উদ্বেগ
- মানসিক চাপ
শরীর অতিরিক্ত গরম থাকার কারণ কি
থার্মোরেগুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত: মানবদেহ থার্মোরেগুলেশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের মূল তাপমাত্রা বজায় রাখে।কোন কারনে থার্মোরেগুলেশন প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত হলে শরীর অতিরিক্ত গরম হতে পারে।
বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় তাপ বেশি উৎপন্ন হওয়া: মানব দেহের কোষীয় শ্বসন এবং পেশী কার্যকলাপ সহ বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হওয়া। যদি বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় তাপ বেশি উৎপন্ন হয় তবে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়।
শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম: কঠোর শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বিপাকীয় তাপ উত্পাদন বৃদ্ধি করে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম বেশি পরিমাণে বিপাকীয় তাপ উৎপাদন করে। ফলে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়।
সীমিত পরিমাণে তাপ অপচয়: সাধারণত শরীর ঘাম, বিকিরণ, পরিবাহী এবং পরিচলনের মতো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ অপচয় করে। যদি কোন কারনে শরীর সীমিত পরিমাণে তাপ অপচয় করে তাহলে শরীর গরম হতে পারে।
উচ্চ আদ্রতায় বাষ্পীয়ভবন: উচ্চ আর্দ্রতা বাষ্পীভবনের মাধ্যমে নিজেকে ঠান্ডা করার শরীরের ক্ষমতাকে বাধা দেয়। যা শরীরের শীতল প্রক্রিয়াকে খর্ব করে করে। ফলে উচ্চ আদ্রতায় বাষ্পীয়ভবন শরীরকে গরম করে।
শারীরিক পানি স্বল্পতা: অপর্যাপ্ত তরল গ্রহণ বা ডিহাইড্রেশন হলে শরীর থেকে পর্যন্ত পরিমাণে ঘাম নিঃসরণ ব্যাহত হয়। ফলে শরীরের তাপমাত্রা নিঃসরণ হয় না। তাই অতিরিক্ত মাত্রায় ডিহাইড্রেশন শরীরের অতিরিক্ত গরম থাকার কারণ।
অনুপযুক্ত পোশাক পরিধান: আঁটসাঁট, গাঢ় রঙের, বা অন্তরক পোশাক শরীরের তাপ তাপ আটকে রাখে। শরীর থেকে তাপ অপচয় কম হয়। তাই গরম পরিবেশে, অনুপযুক্ত পোশাক পরিধান শরীর অতিরিক্ত গরম থাকার কারণ হতে পারে।
পরিবেশগত কারণ: পরিবেশের গরম জলবায়ুর ও তীব্র সূর্যালোক পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে গরম করে তোলে। পরিবেশের এই উচ্চ তাপমাত্রা শরীরকে অতিরিক্ত গরম করে তুলতে পারে।
জনাকীর্ণ এলাকায়: জনাকীর্ণ এলাকা, বদ্ধ জায়গায় বায়ুচলাচল সঠিকভাবে নাহলে তাপ আটকে রাখে। এলাকায় সঠিক বায়ু চলাচল না হলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
শারীরিক অসুস্থতা: জ্বর, সংক্রমণ, হাইপারথাইরয়েডিজম, ক্লান্তি বা হিটস্ট্রোকের মত অসুস্থতা শরীরের থার্মোরেগুলেটরি মেকানিজমকে ব্যাহত করতে পারে। ফলে শরীর অতিরিক্ত গরম থাকতে পারে।
আরো পড়ুন:মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
ওষুধ: অ্যান্টিকোলিনার্জিক ওষুধ, উদ্দীপক জাতীয় ওষুধ, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, অ্যান্টিহিস্টামাইনস এবং মূত্রবর্ধক জাতীয় ওষুধও শরীর গরম করতে পারে।
অ্যালকোহল: অ্যালকোহল ও কেফিন সেবন শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই অ্যালকোহল ও কেফিন শরীর অতিরিক্ত গরম থাকার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়
- হাইড্রেটেড থাকুন: সারা দিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায় বা শারীরিক পরিশ্রমের সময়। ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- হালকা পোশাক পরুন: আর্দ্রতা বজায় থেকে এমন সুতোর তৈরি ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন যাতে ঘাম বাষ্পীভূত হয় এবং শরীরকে শীতল করে।
- হালকা রঙের পোশাক পরিধান করুন: হালকা রঙের পোশাক সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে। টাইট-ফিটিং, কাল ও গাড়ো রঙের কাপড় তাপকে আটকে রাখে। তাই অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে এ সমস্ত কাপড় এড়িয়ে চলুন।
- সূর্য তাপ পরিহার করুন: সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে রক্ষা পাবার জন্য টুপি, ছাতা এবং হালকা ওজনের পোশাক পরুন। যা উন্মুক্ত ত্বককে ঢেকে রাখে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে।
- সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করতে এবং হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- ছায়াযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন: দিনের উষ্ণতম সময় গুলিতে (সাধারণত সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টার মধ্যে) সরাসরি সূর্যের এক্সপোজার এড়াতে এবং অতিরিক্ত উত্তাপের ঝুঁকি কমাতে ছায়াযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন।
- শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সীমিত করুন: দিনের উষ্ণতম সময়ে কঠোর ক্রিয়াকলাপ এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে শারীরিক পরিশ্রমে সময় ঘন ঘন বিরতি নিন।
- নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন: শরীরের তাপমাত্রা কমাতে শীতল ঝরনায় গোসল করুন। বিশেষ করে বাইরের কার্যকলাপ বা ব্যায়ামের পরে নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন।
- ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন: শরীরকে ঠাণ্ডা করতে এবং অতিরিক্ত গরম হওয়ার ঝুঁকি কমাতে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
- কোল্ড প্যাক ব্যবহার করুন: ঠাণ্ডা কম্প্রেস বা বরফের প্যাকগুলি শরীরের পালস পয়েন্টে যেমন ঘাড়, কব্জি এবং কপালে রাখুন যাতে শরীর ঠান্ডা হয়। এটি অতি দ্রুত অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়।
- হালকা ও ঠাণ্ডা খাবার খান: হালকা খাবার বেছে নিন যা হজম করা সহজ এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত ফল, শাকসবজি এবং সালাদের মতো শীতল খাবার গরম থেকে স্বস্তি দিতে পারে।
- ফলের জুস: তীব্র গরমের এই সময়ে আপনি ভিটামিন-সি যুক্ত ফলের জুস খেতে পারেন। এতে করে আপনি হাইড্রেট থাকবেন এবং আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- গরম ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: গরমের দিনে গরম খাবার, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড, স্যান্ডউইচের, মাংস, তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- টক দই : শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ধরে রাখতে টক দইয়ের জুড়ি নেই। তাই তাপদাহের এই সময়ে আপনি নির্মিত টক দই খেতে পারেন যা আপনাকে প্রশান্তি দিবে।
- অ্যালকোহল এবং ক্যাফিন এড়িয়ে চলুন: অ্যালকোহল এবং ক্যাফিনযুক্ত পানীয়ের ব্যবহার সীমিত করুন। কারণ এগুলো শরীরকে ডিহাইড্রেট করতে পারে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- তীব্র তাপদাহ এড়িয়ে চলুন: যখন তীব্র তাপদাহ সতর্কতা জারি করা হয়। তখন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যতটা সম্ভব বাড়ির ভিতরে থাকার চেষ্টা করুন।
- লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করুন: মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, দ্রুত হৃদস্পন্দন এবং মাথাব্যথার মতো তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতার লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। লক্ষণগুলি আরও খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- খাবার স্যালাইনের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন: অনেকেই আছেন যারা গরমে খাবার স্যালাইন খেয়ে থাকেন। কিন্তু এই খাবার স্যালাইন আপনার শরীরের ইলেকট্রোলাইট কে তারতম্য করতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত খাবার স্যালাইন না খাওয়াই ভালো।
- পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিন: ধীরে ধীরে গরম আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিন তাপের মধ্যে বাইরে বেশি সময় ব্যয় করুন। শরীরকে আরও কার্যকরভাবে উচ্চ তাপমাত্রার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে কৌশলী ভাবে বাহিরে বের হন।
অতিরিক্ত গরমে কি কি সমস্যা হয়
ক্লান্তি: অতিরিক্ত গরমের ফলে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। যেমন ভারী ঘাম, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। অতিরিক্ত ঘামার ফলে শরীর অত্যধিক পানি এবং লবণ ঘাটতি হয়।
হিট ক্র্যাম্পস: অতিরিক্ত ঘাম এবং অতিরিক্ত গরম করার সময় ইলেক্ট্রোলাইট ক্ষয় বেদনাদায়ক পেশীর ক্র্যাম্প হতে পারে, সাধারণত পেটে, বাহুতে বা পায়ে।
হিট স্ট্রোক: হিট স্ট্রোক একটি জীবন-হুমকিপূর্ণ অবস্থা যেখানে শরীরের মূল তাপমাত্রা বিপজ্জনক মাত্রায় (104°F বা 40°C এর উপরে) বেড়ে যায়। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বিভ্রান্তি, দ্রুত হৃদস্পন্দন, গরম এবং শুষ্ক ত্বক, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং খিঁচুনি। এমত অবস্থায় খুব তাড়াতাড়ি চিকিত্সার প্রয়োজন হয়।
ডিহাইড্রেশন: অত্যধিক গরমের ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। কারণ শরীর ঘামের মাধ্যমে তরলগুলি দ্রুত পূরণ করার চেয়ে হারায়। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে শুষ্ক মুখ, গাঢ় প্রস্রাব, ক্লান্তি এবং হালকা মাথাব্যথা।
তাপ ফুসকুড়ি: কাঁটাযুক্ত তাপ হিসাবেও পরিচিত, তাপ ফুসকুড়ি ঘটে যখন ঘামের নালীগুলি ব্লক হয়ে যায়, ত্বকের পৃষ্ঠের নীচে ঘাম আটকে যায়। এটি লাল, চুলকানি বা ফোসকা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে এমন জায়গায় যেখানে পোশাক ত্বকে ঘষে।
রোদে পোড়া: দীর্ঘক্ষণ সূর্যের আলোতে থেকলে, অতিরিক্ত উত্তাপের ফলে রোদে পোড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে। একটি বেদনাদায়ক ত্বক প্রতিক্রিয়া যা ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতি করে UV বিকিরণ দ্বারা সৃষ্ট। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে লালভাব, ব্যথা, ফোসকা পড়া এবং খোসা ছাড়ানো।
হিট সিনকোপ: হিট সিনকোপ হল একটি আকস্মিক অজ্ঞান পর্ব যা শরীর অতিরিক্ত গরম হলে ঘটতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা তাপমাত্রায় হঠাৎ পরিবর্তনের সময়। এটি প্রায়শই মাথা ঘোরা এবং হালকা মাথাব্যথা দ্বারা অনুষঙ্গী হয়।
হাইপারথার্মিয়া: অতিরিক্ত গরমের ফলে হাইপারথার্মিয়া হতে পারে। এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তাপ উৎপাদনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়।
চিকিৎসার অবস্থার ক্রমবর্ধমানতা: অতিরিক্ত উত্তাপ আগে থেকে বিদ্যমান চিকিৎসা পরিস্থিতি যেমন কার্ডিওভাসকুলার রোগ, শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি এবং স্নায়বিক অবস্থাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মেয়েদের শরীর গরম থাকে কেন
- বিভিন্ন কারণে মেয়েদের শরীর গরম থাকে বিশেষ করে হরমোন জনিত কারণে।
- পরিবেশগত কারণে জন্য মেয়েদের শরীর অনেক বেশি গরম থাকে। মেয়েরা বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকে।
- মেয়েরা বেশিরভাগ সময়ই জামা পড়ে থাকে সে কারণেও শরীর গরম থাকতে পারে।
- মেয়েদের পিরিয়ড এর সময় হরমোন জনিত কারণেও শরীর গরম হতে পারে।
শরীর গরম হলে কি খাওয়া উচিত
শরীর গরম হলে কি খাওয়া উচিত চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক:
পানি: প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন তাদের আপনার শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে। পানি স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করবে।
ফলমূল: ফলমূল এর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ এবং ফাইবার যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ফলমূল থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পেয়ে থাকে অনেক উপকার এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
প্রোটিন: প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো হল দই, টক দই, দই দই তৈরি লাচি, মাঠা ইত্যাদি যা আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে এবং ক্যালসিয়াম ও আমিষ দুটোই চাহিদা পূরণ করে ।এছাড়া এগুলো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারে ব্যাকটেরিয়া যা হজমে সাহায্য করে। এবং তার সাথে শরীর কেউ ঠান্ডা রাখে।
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন: এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া কোন খাবার, তেল চর্বিযুক্ত অলা খাবার, কফিকফি, চা, ও অ্যালকোহল জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলা আমাদের শরীরের জন্য ভালো।
লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক আজকে আমার এই পোস্টটি যদি আপনার করে ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনার উপকারে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অনুরোধ রইল। জানাই বিষয়গুলো নিয়ে সকলে জানতে পারে।
টুকিটাকিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url